কীভাবে জ্ঞানী ব্যক্তিরা ধ্বংস হয়
তাক্বওয়া (সতর্কতা) এবং ভয় হলো জ্ঞানের উত্তরাধিকার
এবং এর পরিমাপ। জ্ঞান হচ্ছে আধ্যাত্মিকতার রশ্মি এবং ‘ঈমান’- এর হৃদয়। যে তাক্বওয়া (সতর্কতা)
উপেক্ষা করেছে সে জ্ঞানী ব্যক্তি নয়, এমনও যদি হয় সে জ্ঞানের অস্পষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে
চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে পারে। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন,“ তাঁর দাসদের মাঝে একমাত্র জ্ঞানী ব্যক্তিরাই
আল্লাহকে ভয় পায়।” (সূরা ফাতির : ২৮)
জ্ঞানী ব্যক্তিরা আটটি জিনিসে ধ্বংস হয়। সেই আটটি জিনিস হলো;
ক) লোভ এবং কৃপণতা
খ) লোক দেখানো (রিয়া) এবং স্বজনপ্রীতি।
গ) প্রশংসার প্রতি ভালোবাসা।
ঘ) সে বিষয়ের ভিতরে সন্ধান করা যার বাস্তবতায় তারা
পৌছতে অক্ষম।
ঙ) অতিরঞ্জিত প্রকাশভঙ্গি দিয়ে বক্তব্যকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা।
চ) আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সামনে বিনয়ের অভাব।
ছ) আত্মম্ভরিকতা।
এবং
জ) যা জানে সে অনুযায়ী কাজ না করা।
ঈসা (আঃ) বলেছেনঃ “ মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্য হলো ঐ ব্যক্তি যে তার জ্ঞানের
জন্য প্রসিদ্ধ, তার কাজের জন্য নয়।” রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“ কোন বেয়াদব আহ্বানকারীর সাথে বসো না যে
তোমাকে আহ্বান করে নিশ্চিত জ্ঞান থেকে সন্দেহের দিকে, আন্তরিকতা থেকে লোক দেখানোর দিকে,
বিনয় থেকে অহংকারের দিকে, সৎ উপদেশ থেকে শত্রুতার দিকে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ থেকে আকাঙ্খার
দিকে। তার কাছে যাও যে জ্ঞানী, যে তোমাকে আহ্বান করে অহংকার থেকে বিনয়ের দিকে, লোক দেখানো
থেকে আন্তরিকতার দিকে, সন্দেহ থেকে নিশ্চিত জ্ঞানের দিকে, আকাঙ্খা থেকে আত্মনিয়ন্ত্রণের
দিকে, শত্রুতা থেকে সৎ উপদেশ- এর দিকে।” কোন ব্যক্তিই সৃষ্টির কাছে উপদেশ দেয়ার
যোগ্যতা রাখে না শুধু সে ছাড়া যে এ খারাপ জিনিসগুলোকে পিছনে ফেলতে পেরেছে তার সত্যবাদীতার
মাধ্যমে। সে বক্তৃতার ক্রটিগুলো দেখতে পায় এবং জানে কী সঠিক ও কী সঠিক নয় এবং চিন্তার
ত্রæটিসমূহ এবং নফসের লালসা ও আকাঙ্খাগুলো সম্পর্কে জানে।
হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন,“ দয়ালু ও স্নেহশীল চিকিৎসকের মতো হও যে
অসুধ নির্বাচন করে যা উপকারী হবে।” তারা ঈসাকে (আঃ) জিজ্ঞেস করলোঃ “ কার সাথে আমরা বসবো, হে রুহুল্লাহ?”
তিনি বললেন, “ তার সাথে যার
চেহারা তোমাকে আল্লাহর কথা মনে করায় এবং যার কথা তোমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং যার কাজ
তোমাকে আখেরাতকে পেতে উৎসাহিত করে।”
যে তার হৃদয়কে কোন কথা গ্রাহ্য না করার প্রবৃত্তি থেকে
রক্ষা করে, নফসকে ক্ষুধা থেকে রক্ষা করে এবং অজ্ঞতার বিরুদ্ধে বুদ্ধিকে রক্ষা করে তাকে
মুত্তাকীদের দলে প্রবেশ করানো হবে। এরপর যে তার জ্ঞানকে কল্পনাবিলাস থেকে রক্ষা করবে
এবং সম্পদকে হারাম থেকে রক্ষা করবে, তাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“ প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীর জন্য জ্ঞান
সন্ধান করা বাধ্যতামূলক।” আর তা হলো নিজ সত্তা সম্পর্কে জ্ঞান।
অতএব সত্তার জন্য প্রয়োজন যে সে প্রত্যেক অবস্থায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে অথবা কৃতজ্ঞতার
অভাব স্বিকার করে ক্ষমা চাইবে। যদি তা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে গ্রহনযোগ্য হয় তাহলে তা হবে তার উপরে একটি নিয়ামত
এবং যদি না হয় তাহলে তা হবে তার প্রতি (আল্লাহর) ন্যায়বিচার। প্রত্যেক সত্তার জন্য
কাজ করা প্রয়োজন যেন তা আনুগত্যের কাজগুলোতে সফলতা লাভ করে এবং ক্ষতিকার কাজ করা থেকে
বিরত থাকার প্রচেষ্টাকে রক্ষা করে চলে।
এসবের ভিত্তি হচ্ছে সব প্রয়োজন ও নির্ভরতা একমাত্র
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার উপরে তা বুঝতে পারা এবং তাক্বওয়া ও আনুগত্য। এর চাবি হচ্ছে
তোমার বিষয়গুলো আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে ছেড়ে দেওয়া, সব সময় মৃত্যুকে স্মরণ করে
পাওয়ার আশাকে কেটে ফেলা এবং সর্ব-বাধ্যকারী আল্লাহর সামনে তুমি দাঁড়িয়ে আছো তা ভাবা।
এটি তোমাকে বন্দিত্ব থেকে বিশ্রাম দেবে, শত্রু থেকে উদ্ধার করবে এবং সত্তাকে শান্তি
দিবে। ইখলাস অর্জনের পথ হচ্ছে শৃঙ্খল আনুগত্য এবং তার মূল নির্ভর করে জীবনকে ‘একটি দিন’- এর মতো বিবেচনা
করাতে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“ এ পৃথিবীর জীবন এক ঘন্টার মত, তাই একে
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার আনুগত্যে ব্যয় করো।” এ সবকিছুর দিকে দরজা হচ্ছে সর্বক্ষণ গভীর
ভাবনার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া। এ গুটিয়ে নেয়ার উপায় হচ্ছে সন্তুষ্টি
এবং এমন সব পার্থিব বিষয় পরিত্যাগ করা যা তোমার সাথে সম্পর্কিত নহে। গভীল ভাবনার পথ
হলো শূণ্যতা (আকাঙ্খাবিহীনতা) এবং শূণ্যতার খুঁটি হচ্ছে নফসকে ‘বিরত রাখা’। ‘বিরত থাকার’ পূর্ণতা হলো
তাক্বওয়া (সতর্কতা) এবং তাক্বওয়ার দিকের দরজা হলো ভয়। ভয়-এর প্রমাণ হলো আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালার হামদ ও তাসবীহ করা, আন্তরিকতার সাথে তাঁর আদেশ মেনে চলাতে লেগে থাকা, ভয় ও
সতর্কতা এবং নিষিদ্ধ জিনিস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা, আর এ পথের পথপ্রদর্শক হচ্ছে জ্ঞান।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছে, “তাঁর দাসদের মধ্যে
একমাত্র জ্ঞানী ব্যক্তিরাই আল্লাহকে ভয় পায়।” ( সূরা ফাতির : ২৮)
কৃতজ্ঞতা
প্রত্যেক শ্বাস নেওয়ার সাথে তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করা উচিত, নিশ্চয়ই হাজার ধন্যবাদ অথবা তারও বেশি। কৃতজ্ঞতার সবচেয়ে নিচের স্তর হচ্ছে
রহমত আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছ থেকে আসছে তা দেখতে পাওয়া, তার কারণ যাই হোক না
কেন এবং সে কারণের সাথে হৃদয় যুক্ত না থাকা। এতে আছে - যা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট
থাকা; এর অর্থ হচ্ছে তাঁর দেওয়া নেয়ামতের বিষয়ে তাঁর অবাধ্য না হওয়া অথবা তাঁর আদেশ
ও নিষেধগুলোর বিরোধিতা না করা, তাঁর দান করা নেয়ামতের কারণে।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার একজন কৃতজ্ঞ দাস হও সব দিক
থেকে, তাহলে তুমি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাকে সব দিক থেকে উদার রব হিসেবে দেখতে পাবে।
যদি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার মুখলেস দাসদের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার ইবাদতে
প্রত্যেক অবস্থায় ধন্যবাদ জানানোর চাইতে কোনো উত্তম পথ থাকতো তাহলে তিনি ঐ ইবাদতকে
অন্য সব সৃষ্টির উপরে নাম দিতেন। যেহেতু এর চাইতে উত্তম কোন ইবাদত নেই তাই তিনি সব
ইবাদতের মধ্যে এ ইবাদতকে বাছাই করেছেন এবং যারা এ ধরনের ইবাদত করে তাদেরকে বাছাই করেছেন
এই বলে- “তোমরা দাসদের মধ্যে খুব অল্প ক’জনই কৃতজ্ঞতা
স্বীকারকারী।” (সূরা সাবা : ১৩)
পূর্ণ কৃতজ্ঞতা স্বীকার হলো সবচেয়ে কম কৃতজ্ঞতা প্রকাশে
তোমার অক্ষমতা নিয়ে দুঃখ করা এবং আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার প্রশংসা আন্তরিকভাবে প্রকাশ
করার মাধ্যমে তা প্রকাশ করা। কারণ ধন্যবাদ দেওয়াটাও বান্দাহর উপর আল্লাহর একটি দান
এবং এর জন্যও সে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবে।পূর্ববর্তী নেয়ামতের চাইতেও এটি বেশি মূল্যবান,
যা তাকে প্রথম অবস্থায় ধন্যবাদ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তাই, যতবার একজন ধন্যবাদ দেয়
তার জন্য উচ্চতর ধন্যবাদ দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে যায় এবং এভাবে তা চলবে অনন্তকাল পর্যন্ত,
আর এভাবে সে তাঁর নেয়ামতে ডুবে থেকে কৃতজ্ঞতার সর্বোচ্চ অবস্থা অর্জনে অক্ষম হয়ে যায়।
কারণ কীভাবে বান্দাহ আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নেয়ামতের সমান কৃতজ্ঞতা জানাবে এবং কীভাবে
সে আল্লাহর কাজের সাথে নিজের কাজ সমান করবে যখন বান্দাহ সব সময়ই দুর্বল এবং তার কোন
রকম শক্তি নেই শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছ থেকে ছাড়া?
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার তাঁর বান্দাহদের কাছ থেকে
আনুগত্যের প্রয়োজন নেই, কারণ চিরকালের জন্য নেয়ামত বৃদ্ধি করে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে।
অতএব, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার একজন কৃতজ্ঞ বান্দাহ হও এবং এভাবে তুমি আশ্চর্যজনক
জিনিসগুলো দেখতে পাবে।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়
যখন তুমি তোমার বাড়ি থেকে বের হও, তা এমনভাবে হও যেন
তুমি আর ফেরত আসবে না। বের হও শুধু আল্লাহর আনুগত্য করার জন্য অথবা ঈমানের জন্য। তোমার
আচার-আচরণে প্রশান্ত অবস্থা ও মর্যাদা বজায় রাখো এবং আল্লাহকে স্মরণ করো গোপনে ও প্রকাশ্যে।
আবু যার- এর সাথীদের একজন আবু যার-এর পরিবারের একজনকে
জিজ্ঞেস করলো সে কোথায়। সে নারী বললো, “তিনি বাইরে গেছেন।” যখন ঐ ব্যক্তি
জিজ্ঞেস করলো কখন আবু যার ফিরবেন, ঐ নারী বললো,“কখন তিনি ফিরবেন তা আরেক জনের উপর নির্ভর করে, কারণ তার
নিজের কোন ক্ষমতা নেই।” আল্লাহ ধার্মিক ও পথভ্রষ্ট বান্দাহদের
কাছ থেকে শিখো যেখানেই তুমি যাও। আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালার কাছে বলো তোমাকে তাঁর মুখলেস ও সত্যবাদী বান্দাহদের মাঝে স্থান দিতে এবং যারা
চলে গেছে তাদের সাথে যুক্ত করতে এবং তাদের সাথে জড়ো করতে। তাঁর প্রশংসা করো এবং ধন্যবাদ
দাও সে কারণে যে সব ক্ষুধা থেকে তিনি তোমাকে সরিয়ে রেখেছেন এবং অন্যায়কারীদের কুৎসিত
কাজ থেকে তোমাকে তেনি রক্ষা করেছেন বলে। তোমার
দৃষ্টিকে নামিয়ে রাখো অশ্লীল কামনা ও নিষিদ্ধ জিনিস থেকে এবং তোমার ভ্রমণে সঠিক পথ
অনুসরণ করো। সতর্ক দৃষ্টি রাখো, আল্লাহ সুবহানাহু তায়াকে ভয় করো প্রত্যেক পদক্ষেপে,
যেন তুমি পুলসিরাত পার হচ্ছো। মনোযোগ হারিয়ো না। তাঁর লোকদেরকে সালাম বলো - প্রথমে
সালাম দিয়ে এবং উত্তর দিয়ে। তাদের সাহায্য করো যারা সৎ কাজের জন্য তা চায়, তাদের পথ
দেখাও যারা পথ হারিয়ে ফেলেছে এবং মূর্খদের উপেক্ষা করো।
যখন তুমি বাড়িতে ফেরত আসো - এতে প্রবেশ করো যেভাবে
একটি লাশ কবরে প্রবেশ করে, যার একমাত্র চিন্তা হলো আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভ করা।
কোরআন তেলাওয়াতের বিষয়
যে কোরআন তেলাওয়াত করে এবং নিজেকে আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালার সামনে বিনয়ী করে না, যার অন্তর নরম হয় না, অনুতপ্ত হয় না এবং তার ভিতরে ভয়
জাগে না, সে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বিষয়ে বিরাটত্বকে যথাযথ মূল্য দেয় না এবং সে
স্পষ্টভাবে ক্ষতির মধ্যে আছে।
যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করবে তার তিনটি জিনিস প্রয়োজন।
ক) একটি ভীতিপূর্ণ অন্তর।
খ) প্রশান্ত ও গ্রহণে আগ্রহী একটি শরীর এবং
গ) একটি যথাযথ তেলাওয়াতের স্থান।
যখন তার অন্তর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাকে ভয় করে তখন
অভিশপ্ত শয়তান তার কাছ থেকে পালায়। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন, “ যখন তুমি কোরআন পড়ো, আল্লাহর কাছে আশ্রয়
চাও অভিশপ্ত শয়তান থেকে।” (সূরা নাহল : ৯৮)
যখন সে সব ধরনের সংযুক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করে তখন
তার অন্তর তেলাওয়াতে মগ্ন হয় এবং কোরআনের নূর ও এর উপকারিতা লাভে তাকে কোনো কিছু বাধাগ্রস্থ
করে না। যখন সে একটি নির্জন জায়গা পায় এবং মানুষজন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় দু’ টি গুণাবলী নিয়ে-
অন্তরে বিনয় এবং শারীরিক প্রশান্তি, তখন তার আত্মা এবং তার বাতেনী সত্তা আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালার সাথে মিলন অনুভব করবে, এবং সে আবিষ্কার করবে সেই মিষ্টি স্বাদ যখন আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালা তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাহর সাথে কথা বলেন, কীভাবে তিনি তাদের সাথে তাঁর নম্রতা প্রকাশ করেন এবং তাদেরকে বাছাই করেন তাঁর বিভিন্ন সম্মানজনক পদক ও আশ্চর্যজনক নিদর্শনের
জন্য। যদি সে সেই শরবতের এক পেয়ালা পান করে সে কখনোই আর এই অবস্থা ও এই মুহুর্তটির
চেয়ে অন্য কিছুকে বেশি চাইবে না। এটিকে প্রত্যেক আনুগত্য ও মগ্নতার উপরে স্থান দিবে
যেহেতু তাতে রয়েছে রবের সাথে কথোপকথন- কোন মাধ্যম ছাড়াই।
তাই সাবধান হও কীভাবে তুমি তোমার রবের কিতাব পড়, যিনি
তোমার অভিভাবক, যাকে তুমি চাও, কীভাবে তুমি তার আদেশে সাড়া দাও এবং তাঁর নিষেধগুলো
এড়িয়ে চল এবং কীভাবে তুমি তাঁর সীমান মেনে চল, কারণ তা এক মহাক্ষমতাবান কিতাব। আল্লাহ
সুবহানাহু তায়ালা বলেন, “ মিথ্যা-এর মাঝে
প্রবেশ করবে না সামনে থেকে অথবা পিছন থেকে, তা নাযিল হয়েছে প্রজ্ঞাবান ও প্রশংসিতের
কাছ থেকে।” ( সূরা হা-মীম আস্-সাজদাহ্ : ৪২)
অতএব
তা তেলাওয়াত করো ধারাবাহিকভাবে এবং গভীর ভাবনার সাথে এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি ও হুমকির
সীমানা মেনে চলো। এর উদাহরণ ও সতর্কবাণীর উপর গভীরভাবে ভাবো। সতর্ক থাকো শুধু এর অক্ষরগুলোর
তেলাওয়াতকে অযাচিত মর্যাদা দেয়া থেকে এবং একই সময়ে এর ভেতরে থাকা আগনগত সীমানা মেনে
চলতে ব্যর্থ হওয়া থেকে।
0 Comments